English
শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪
...

আজ বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী

বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া

ঢাকা, ৯ মে ২০২০, শনিবার: আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী, দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী।

প্রত্যেক বছর এই দিবসটি আওয়ামী লীগ ও দলের সব সহযোগী সংগঠন, মহাজোটের শরীক দল এবং ড. এম এ ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মরহুমের কবর জিয়ারত, কবরে পুষ্পস্তক প্রদান, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও দরিদ্রদের মধ্যে খাদ্য বিতরণসহ ব্যাপক কর্মসূচি পালন করা হয়ে থাকে। কিন্ত এবার করোনা ভাইরাস রোগ জনিত মহামারির কারনে অনাকাঙ্খিত এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান, জনসমাবেশ ইত্যাদি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে সংবাদ মাধ্যমকে মরহুম ড. মিয়ার ভাতিজা, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ড. এম এ ওয়াজেদ ফাউন্ডেশন পীরগঞ্জের চেয়ারম্যান একেএম ছায়াদত হোসেন বকুলের দেয়া ভাষ্য অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে তথা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কবর জিয়ারত, কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ ইত্যাদি পালন করা যাবে। তিনি জানান, "মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিভিন্ন এতিমখানায় ইফতার সামগ্রী প্রদান করা হবে।"

ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া, সবার সুপরিচিত "সুধা মিয়া" ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুর জিলার পীরগঞ্জ থানার ফতেপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অসাধারণ মেধাবী ও শিক্ষানুরাগী। কীর্তিমান, বরেণ্য ও সফল বিজ্ঞানী, বাংলাদেশের আণবিক গবেষণার পথিকৃৎ ড. মিয়া ২০০৯ সালের ৯ মে পরলোকগমন করেন। তিনি বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সরকারি বিভিন্ন বিভাগের উচ্চপদে অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করে পরমাণু গবেষণায় উল্লেখযোগ্য ও অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।

বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার বিস্তৃত পরিধির গবেষণা কর্মের মধ্যে - নিউক্লিয়ার এন্ড রিয়েক্টর ফিজিক্স, সলিড স্টেট ফিজিক্স, ফান্ডামেন্টাল ইন্টারেকশন এন্ড পার্টিক্যাল ফিজিক্স, হেল্থ এন্ড রেডিয়েশন ফিজিক্স, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিজম,... রিনিউএবল এনার্জি ইত্যাদি অন্যতম।

ড. ওয়াজেদ মিয়া বাংলাদেশ আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দুইবার ও সভাপতি হিসাবে পাঁচবার দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ বিজ্ঞান উন্নয়ন সমিতি, বাংলাদেশ পদার্থ বিজ্ঞানী সমিতি, বাংলাদেশ বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। তাঁরই পরামর্শ ও পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৯৭ সালে 'জাতীয় সমন্বিত উন্নয়ন ফাউন্ডেশন" প্রতিষ্ঠা করা হয়।

ড. ওয়াজেদ মিয়া শুধুমাত্র একজন মেধাবী ছাত্রই ছিলেননা, বিজ্ঞান গবেষণার পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে ছিলেন সদা সচেষ্ট। তাইতো তিনি ষাটের দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে স্বক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন এবং ১৯৬২ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন।

তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রথম সন্তান তথা বড় মেয়ে শেখ হাসিনার সাথে ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বৈবাহিক জীবনের সূচনা করেন। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জাতির ঘোর অমানিশাকালে শত বিপদ আর চরম অনিশ্চয়তার মধ্যেও তিনি বঙ্গবন্ধু পরিবারের জামাই হয়েও বড় ছেলের মত দায়িত্ব পালন করেছেন।

বিজ্ঞান গবেষণা আর জাতিকে বিশ্বের দরবারে উচ্চস্থানে নিয়ে যাবার প্রচেষ্টায় সুযোগ্য নেতৃত্ব দেয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ছাড়াও অনেক সামাজিক সংগঠনেও সম্পৃক্ত ছিলেন ড. ওয়াজেদ মিয়া। তিনি ছিলেন ঢাকাস্থ রংপুর জেলা সমিতির আজীবন সদস্য এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দুবছর মেয়াদকালের জন্য এই সমিতির নির্বাচিত সভাপতি।

এছাড়াও বাংলাদেশ জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং উত্তরবঙ্গ জনকল্যাণ সমিতি, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন ফোরাম, ঢাকাস্থ বৃহত্তম রংপুর কল্যাণ সমিতি, বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদ, রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার মির্জাপুর বছির উদ্দিন মহাবিদ্যালয়ের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, এ মহান বিজ্ঞানীর মৃত্যুর পর তাঁর অন্তিম বাসনায় পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।




মন্তব্য

মন্তব্য করুন